ঢাকা , রবিবার, ০৯ মার্চ ২০২৫ , ২৫ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ শুরু করেছে স্টারলিংক রংপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা নাহিদকে অব্যাহতি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনাল: ভারত-নিউজিল্যান্ডের মহারণ আজ ইউক্রেনে শান্তি চান পুতিন ,ট্রাম্পের বিশ্বাস  বাংলাদেশে সরকার বদলালে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের পরিবর্তন হতে পারে-ভারতের সেনাপ্রধান ইউক্রেনে ভয়াবহ হামলা রাশিয়ার, নিহত অন্তত ২৫ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবিতে মধ্যরাতে উত্তাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মুসিবত ডেকে আনতে ফ্যাসিবাদ তাড়াইনি: হাসনাত আব্দুল্লাহ বাংলাদেশে ওয়ান-ইলেভেনের সময় যুক্তরাষ্ট্রের নীতিতে ভুল ছিল: সাবেক মার্কিন কূটনীতিক ফরিদপুরে পিকআপে ছাগল চুরি, পালানোর সময় আটক ৩ আমার জীবনের গুরুত্বপূর্ণ তিন মানুষ মা, স্ত্রী ও কন্যা- তারেক রহমান নতুন রূপে ধরা দিলেন নুসরাত ফারিয়া মাগুরায় ধর্ষণ: শিশুটি এখনো লাইফ সাপোর্টে, চিকিৎসায় মেডিকেল বোর্ড সীমান্তে ফের বাংলাদেশিকে গুলি করে হত্যা করল বিএসএফ হাসপাতালের বারান্দা থেকে পড়ে রোগীর মৃত্যু নির্বাচনের সময় ঘোষণা করলেন মিয়ানমারের জান্তা প্রধান নারী দিবসে বিশেষ ফ্লাইট পরিচালনা করলো বিমান মুক্তি পেলেন দক্ষিণ কোরিয়ার অভিশংসিত প্রেসিডেন্ট ইউন-সক ইয়ল সৌদি আরবে শীর্ষ বৈঠকে মিলিত হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র-ইউক্রেন ছয় মাসে ব্যাংক থেকে প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে সরকার

প্রমাণ দিলে দুর্নীতি-অনিয়মের দায় নিয়ে পদত্যাগ করবেন রাবির আইসিটি পরিচালক

  • আপলোড সময় : ০৬-০৩-২০২৫ ০২:৪৬:৫৪ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০৬-০৩-২০২৫ ০২:৪৬:৫৪ অপরাহ্ন
প্রমাণ দিলে দুর্নীতি-অনিয়মের দায় নিয়ে পদত্যাগ করবেন রাবির আইসিটি পরিচালক
স্নাতক পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার আগেই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) এক শিক্ষার্থীর প্রথম শ্রেণীর চাকরি পাওয়া নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়ে বুধবার (৬ মার্চ) বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে সবার উদ্দেশ্যে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন রাবির আইসিটি সেন্টারের বর্তমান পরিচালক অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম।


এই নিয়োগে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থ ছাড়া পরিচালক বা প্রশাসনের কারো স্বার্থ জড়িত আছে- এমন প্রমাণ কেউ দিতে পারলে তিনি দুর্নীতি-অনিয়মের দায় নিয়েই পরিচালকের পদ থেকে সরে দাঁড়াবেন বলে জানিয়েছেন। বুধবার দিবাগত রাতে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে দেয়া এক পোস্টে এই তথ্য জানান তিনি।

এই নিয়োগের প্রেক্ষাপট উল্লেখ করে তিনি লিখেছেন, 'বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৪-২৫ সেশনের ভর্তি পরীক্ষার অফিশিয়াল কার্যক্রম শুরুর পর আমাকে আকস্মিকভাবে পরিচালকের দায়িত্ব দেয়া হয়। ইতোমধ্যেই আগের পরিচালক অনলাইন ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনার জন্য যথারীতি আগের বছরগুলোর মতই বর্তমান প্রশাসনকে দিয়ে একটা টেকনিক্যাল কমিটিও গঠন করিয়ে নিয়েছিলেন।

কিন্তু সাবেক পরিচালক এক মাসের ছুটি নিয়ে জাপানে যেতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বেকায়দায় পরে তাকে পরিবর্তন করে আমাকে দায়িত্ব দিয়ে দেয়। দায়িত্ব নেয়ার পর আগের পরিচালকের গঠন করা সেই টেকনিক্যাল কমিটি নিয়েই কাজ শুরু করি। সেই কমিটির সদস্যরাও প্রথমে আমার অধীনে কাজ করতে সম্মত হয় এবং সে অনুযায়ী কাজ শুরু করি।'

তিনি আরও লিখেছেন, 'উক্ত কমিটির সব সদস্য আমার এবং সাবেক পরিচালকের নিজস্ব বিভাগ অর্থাৎ, সিএসই বিভাগের শিক্ষক এবং বিগত অনেক বছর ধরে তারাই ভর্তি পরীক্ষার অনলাইন আবেদন কার্যক্রম চালিয়ে আসছেন। আগের পরিচালক তাদের বাইরে আর কাউকে দিয়ে এই কাজ চালাতেন না, ফলে সঙ্গত কারণে আর কোনো বিকল্পও ছিলো না তখন।



কিন্তু, কয়েকদিনের মধ্যে হঠাৎ করেই উক্ত কমিটির সদস্যরা বেঁকে বসেন এবং আমাকে পরিস্কার জানিয়ে দেন যে তারা আগের পরিচালক ছাড়া অন্য কারও অধীনে কাজ করতে পারবেন না। প্রায় একই সময়ে জাপান থেকে সাবেক পরিচালকও ফোন কলে ভিসি মহোদয়কে জানিয়ে দেন যে তার গঠন করা কমিটির কাউকে যেন এব্যাপারে জোরাজুরি না করা হয়।' 



এসময় নিজের অসুবিধার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'নতুন পরিচালক হিসেবে আমি পরে যাই মহা বিপাকে, কারণ ততদিনে ভর্তি পরীক্ষার দিনক্ষণ ঘোষণা হয়ে গেছে এবং অনলাইন আবেদনের সময়সূচী পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। তখন হাতে সময় খুবই কম। ভিসি মহোদয় নিরুপায় হয়ে আমাকে জানান যে আমি যেন আগের কমিটিকে বাদ দিয়েই অনলাইন ভর্তি আবেদন কার্যক্রম চালিয়ে যাই, এবং প্রশাসনের পক্ষ থেকে জরুরি ভিত্তিতে আমাকে সম্ভাব্য সব রকমের সহযোগিতা করা হবে।

পরিস্থিতি বিবেচনায় আমি তাৎক্ষণিকভাবে দুইজন উপযুক্ত প্রোগ্রামারের অনুসন্ধান শুরু করি এবং জরুরিভাবে দুইজনকে সহকারী প্রোগ্রামার হিসেবে এডহকে নিয়োগের জন্য ভিসি মহোদয়ের নিকট ডিমান্ড করি এবং ভিসি মহোদয়ের অনুমোদনক্রমে খুব স্বল্প সময়ের মধ্যে তাদের নিয়োগ দেয়া হয়। তাদের একজন ঢাকার একটা সফটওয়্যার কোম্পানির একজন অভিজ্ঞ প্রোগ্রামার (যিনি জয়েন করেও প্রচলিত বেতন ভাতার জন্য প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়ায় আর অগ্রসর হন নাই)।'

তিনি আরও লিখেছেন, 'আরেকজন সহকারী প্রোগ্রামার আমার নিজ বিভাগের ছাত্র যে (মোমেন খন্দকার অপি যাকে নিয়ে আজ বেশ কয়েকটি পত্রিকায় রিপোর্ট হয়েছে) বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং ফাইনাল পরীক্ষা দিয়ে রেজাল্টের অপেক্ষায় আছে এবং শিগগিরই তার ফলাফল প্রকাশিত হবে। ইতোপূর্বে এপিয়ার্ড সার্টিফিকেট দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণীর এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক পদেও আবেদনের নজীর আছে। যাইহোক, সেভাবেই তার নিয়োগপত্র দেয়া হয়, এবং তার পরীক্ষার রেজাল্ট প্রকাশের পরই তার (আমার বিভাগের ছাত্র অপির) বেতন ভাতা দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়।'

নিয়োগপ্রাপ্ত ছাত্র সম্পর্কে তিনি বলেন, 'অপি আমাদের ডিপার্টমেন্টের তার ব্যাচের সবচেয়ে ভালো প্রোগ্রামার হিসেবে পরিচিত। পড়ালেখা করা অবস্থাতেই সে তিন বছর একটা সফটওয়্যার কোম্পানির সাথে যুক্ত ছিলো। সফটওয়্যার কোম্পানির প্রোগ্রামারদের বিষয়ে যাদের ধারণা আছে, তারা জানেন যে স্বল্প সময়ের নোটিশে একজন ভালো এবং একইসাথে যোগ্য প্রোগ্রামার পাওয়া কতটা কঠিন কাজ। আইসিটি সেন্টারের কয়েকটি প্রোগ্রামারের পদ ফাঁকা হয়ে যাওয়ার পর এবং আইসিটি সেন্টারের উপদেষ্টা কমিটির সুপারিশের পরও আগের পরিচালক অনেক চেষ্টা করেও যোগ্য কাউকে বসাতে পারেন নি। 

শুধু তাই না, যে আরেকজনকে একইসাথে নিয়োগ দেয়া হলো, তিনি কিন্তু জয়েন করার পর পরই বিশ্ববিদ্যালয়ের এই স্বল্প বেতনে এডহকে চাকরির ব্যাপারে অনিহা দেখান। কারণ তার মত অভিজ্ঞ কারও পক্ষে কোন চাকরি ছাড়াও শুধু ফ্রিল্যান্সিং/আউটসোর্সিং করে এরচেয়ে ঢেরবেশি টাকা ইনকাম করা সম্ভব। যেহেতু আমাকে কথা দিয়েছে, তাই তিনি আন্তরিকতার অংশ হিসেবে অনলাইন ভর্তি আবেদন কার্যক্রম পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক বেতন ছাড়াই আমাদেরকে সহযোগিতা অব্যাহত রাখার ব্যাপারে আশ্বাস দিয়েছেন এবং এভাবেই আমাদের অনলাইন ভর্তি আবেদন কার্যক্রম বেশ সাবলীলভাবে এগিয়ে চলছে।'

তিনি আরও বলেন, 'কিন্তু, কুচক্রী মহলের এটাতে সহ্য হচ্ছে না। তাদের এখন জোর করেই প্রমাণ করার দরকার যে আগের পরিচালক ছাড়া এই বিশ্ববিদ্যালয় অচল। তাই, তারা এখন আইসিটির উপর বহুমুখী আক্রমণ শুরু করেছে। এক, উদোর পিন্ডি বুদোর ঘাড়ে চাপানোর মত করে ভর্তি কার্যক্রম সংক্রান্ত সকল সমস্যার জন্য আইসিটিকে দায়ী করছে। দুই, এডহকের মত সম্পূর্ণ সাময়িক একটা নিয়োগ নিয়ে অযথাই বিতর্ক সৃষ্টি করছে। শুধু আইসিটি সেন্টার না, অপির ডিপার্টমেন্টের ছাত্র শিক্ষকদেরকে যে কেউ জিজ্ঞেস করে দেখতে পারে, এই নিয়োগ নিয়ে কারো অসন্তোষ আছে কি না? অথবা এই নিয়োগে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থ ছাড়া পরিচালক বা প্রশাসনের অন্য কারও ব্যাক্তিগত কোনো স্বার্থ জড়িত আছে কি না? 

যদি কেউ প্রমাণ দিতে পারে তাহলে আমি দুর্নীতি অনিয়মের দায় নিয়েই পরিচালকের পদ থেকে সড়ে দাঁড়াবো। আমি মনে করি না এই চ্যালেঞ্জ নেয়ার মত কারও সৎ সাহস আছে। প্রকৃত সত্য হচ্ছে, যখন আমি হন্য হয়ে প্রোগামারের সন্ধান করছি, তখন আমার এক কলিগের মাধ্যমে অপির সাথে যোগাযোগ হয় যিনি কিনা খুব সম্ভবত অপিকে তার ফোর্থ ইয়ারের প্রজেক্টে সুপারভাইজ করতেন। অপি আমার ডিপার্টমেন্টের ছাত্র হলেও তাকে এমনকি আমি মুখেও চিনতাম না এবং সত্যি বলতে কি, তার দেশের বাড়ি নেত্রকোনা না কিশোরগঞ্জ আমি এখনো ঠিকমতো জানি না। অথচ কারো কারো অভিযোগ (যেমন, কিছু সাংবাদিক আমার কাছে জানতে চেয়েছে) যে অপি নাকি আমার আত্মীয়।'

এছাড়া ভর্তি পরীক্ষার কেন্দ্র বরাদ্দ নিয়ে সৃষ্টি হওয়া সমালোচনা প্রসঙ্গে তিনি লিখেছেন, 'বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি কমিটির সিদ্ধান্তের বাইরে আইসিটি সেন্টার কিছু করতে পারে না। আমি আইসিটি সেন্টারের পরিচালক হিসেবে যোগদান করার আগেই (সাবেক পরিচালকের সময়) সিদ্ধান্ত নেয়া হয় যে ১. ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে শুধুমাত্র বিভাগীয় শহরের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস চৌহদ্দির মধ্যে। ২. আসন সংখ্যার চেয়ে কোনো কেন্দ্রে আবেদন বেশী হলে, তাকে মেধাক্রম ও কেন্দ্রের পছন্দক্রম অনুযায়ী আসন বণ্টন হবে।

আইসিটি সেন্টারের ভর্তি কমিটির এই সিদ্ধান্তের বাইরে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই এবং ঠিক সে অনুযায়ীই সিট প্ল্যান করা হয়েছে। এখানে আইসিটি সেন্টারকে দায়ী করার কোনো সুযোগ নেই। অসৎ উদ্দেশ্যে শুধু অর্বাচীনরাই এর জন্য আইসিটি সেন্টারের ডিরেক্টরকে দায়ী করতে পারে। আমি পরিচালক হিসেবে যোগদান করার পর ভর্তি উপকমিটিকে এ বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলাম। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। কারণ এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে আগের পরিচালকের সম্মতিতে যিনি অনেক বছরের অভিজ্ঞ। তিনি যদি এটাকে মেনে নিতে পারেন তাহলে আমার সমস্যা কোথায়?'

প্রসঙ্গত, গত ১৮ নভেম্বর এক অফিস আদেশে মোমেন খন্দকার অপি নামের একজনকে আইসিটি সেন্টারের সহকারী প্রোগ্রামার হিসেবে নিয়োগ দেয় প্রশাসন। তবে তখনও তার স্নাতক (সম্মান) চূড়ান্ত পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়নি। মোমেন খন্দকার বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। নিয়োগের প্রায় এক মাস পর ১২ ডিসেম্বর তার চূড়ান্ত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়। এতে তিনি সিজিপিএ–৩.২০ পেয়ে উত্তীর্ণ হন।

কমেন্ট বক্স
প্রতিবেদকের তথ্য

সর্বশেষ সংবাদ
বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ শুরু করেছে স্টারলিংক

বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ শুরু করেছে স্টারলিংক